১৫ লাখ কৃষক বিনামূল্যে পাবেন হাইব্রিড বীজ।
সুমনসেন চট্টগ্রাম জেলা প্রতিনিধি-
বোরো মৌসুমে উৎপাদন বাড়াতে কৃষকদের বিনামূল্যে হাইব্রিড বীজ দেবে সরকার। সারাদেশের ১৫ লাখ কৃষককে এক বিঘা জমি চাষের প্রয়োজনীয় বীজ বিনামূল্যে সরবরাহ করা হবে। প্রথমবারের মতো এ ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয় মনে করছে, এতে বাড়তি দুই লাখ হেক্টর জমিতে উচ্চ ফলনশীল ধানের চাষ হবে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রসারণ) মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল সমকালকে বলেন, দেশের ব্যাপক অঞ্চলজুড়ে বন্যা হওয়ায় এ বছর আমন মৌসুম থেকে যে পরিমাণ ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা তা অর্জন হবে না। ধারণা করা হচ্ছে, গতবারের তুলনায় আড়াই থেকে তিন লাখ টন ধান উৎপাদন কম হবে। এজন্য বোরো মৌসুমে আমনের ঘাটতি পুষিয়ে নেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সরকার। এ লক্ষ্য অর্জনে হাইব্রিড চাষ বাড়ানো হচ্ছে। উল্লেখ্য, গত মৌসুমে এক কোটি ৫৫ লাখ টন আমন ধান উৎপাদন হয়।
কৃষি মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, এ বছর ৪৮ লাখ ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা হাতে নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১১ লাখ হেক্টরে হবে হাইব্রিড ধানের চাষ। গত বছর ৯ লাখ হেক্টর জমিতে হাইব্রিড ধান চাষ হয়েছে। এ বছর দুই লাখ হেক্টরে বাড়তি হাইব্রিড জাতের ধান চাষের লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। এজন্য ১৫ লাখ কৃষককে মাথাপিছু এক বিঘা জমির জন্য দুই কেজি করে বীজ দেওয়া হবে। এতে প্রতি কৃষকের জন্য সরকারের খরচ পড়বে ৫০০ টাকা। মোট ব্যয় হবে ৭৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা। কৃষি মন্ত্রণালয় মনে করছে, এবার বোরো মৌসুম থেকে দুই কোটি ছয় লাখ টন ধান উৎপাদন হবে। গত বছর দুই কোটি দুই লাখ টন ধান উৎপাদন হয়েছিল। বাড়তি জমিতে হাইব্রিড জাতের ধান চাষ হওয়ায় অতিরিক্ত দুই লাখ টন উৎপাদন বাড়বে।
মাঠ পর্যায়ে হাইব্রিড বীজ সরবরাহ করবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আসাদুল্লাহ সমকালকে বলেন, কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের কাছে থাকা ৯০০ টন বীজ ইতোমধ্যে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কার্যালয়গুলোতে সরবরাহ করা শুরু হয়েছে। বাকি বীজ বেসরকারি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা হবে। মাঠ পর্যায়ের অফিসগুলো ইতোমধ্যে এই বীজ সংগ্রহ ও সরবরাহ শুরু করেছে। কোন কোন কৃষক বিনামূল্যের এই বীজ পাবেন, তা নির্ধারণ করবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নেতৃত্বে থাকা উপজেলা কৃষি কমিটি ও ইউনিয়ন কৃষি কমিটি। ইতোমধ্যে তালিকার কাজও শেষ হয়েছে। তিনি বলেন, যে এলাকার যে জাতের হাইব্রিড ধান চাষ হয়, তাদের সেই জাতের বীজই সরবরাহ করা হবে।
কয়েক বছর দেশে ধানের পর্যাপ্ত উৎপাদন হচ্ছে। দেশের চাহিদা মিটিয়ে চাল রপ্তানির পরিকল্পনাও ছিল। কিন্তু এ বছর বন্যার কারণে উৎপাদন কম হয়েছে। অন্যদিকে, দেশে চাহিদাও বেড়েছে। এ পরিস্থিতিতে প্রধান ভোগ্যপণ্য চালের বাজার অস্থির হয়ে পড়েছে। মোটা চালসহ সব ধরনের চালের দাম কেজিতে পাঁচ থেকে সাত টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। সরকারের মজুদও অন্যান্য সময়ের তুলনায় কমে যাওয়ায় বেসরকারি পর্যায়ে চাল আমদানি হচ্ছে।
দৈনিক কলম কথা সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।